বোধিদ্রুম

❑ সাম্য রাইয়ান
 
কর্কশ দুপুরে তোমাকে মেঘ ভেবে
ছুটে যাই। আমার ভালো লাগে।
স্বস্তি পাই। এ হাওয়া—
বাতাশ তোমার শরীরী গন্ধ বয়ে আনে
                  বাড়ি অব্দি।

তোমার আঙিনা—সে তো মেঘের মায়াবী প্রান্তর!

ঐ যে ছেলেটা, শাদাকালো মুখে
প্রতিদিন আমায় দেখতো, ও আসলে
তোমার অপেক্ষা করতো। আমার দিকে তাকিয়ে
কী যেন ভাবতো ভেতরে।
তার কিছুটা পরেই যে ইটভাটা
সেখান থেকে বেরিয়ে আসা তীব্র ধোঁয়া
সবকিছু ভাসিয়ে নিতে চাইতো!
আমার অবশ্য এসব মনে ধরতো না
কখনও; আমার তো কেবল
              মেঘ ছোঁবার ইচ্ছে।

অনেক কলা ঝরায়ে, শেষতক বুঝেছি
আনন্দের কোনও মাথামুণ্ডু নাই।

এই যে জীবনহীনতা, যা আমি
যাপন করি হৃদয়ে-মননে
তা আমাকে চপেটাঘাত করে
কী উঞ্চ অপরাধে! ঘোরগ্রস্ত
ব্যাকুল চোখ তুলে তাকালে
শুধু সেই মাদকতা আমাকে গ্রাস করে।
তবে বৃক্ষ তোমার পায়ের কাছে
            মৃত্যুও হয় কুণ্ঠিত।

অতএব মৃত্যুভাবনা ছাড়ো।
তোমার হৃদয় থেকে
এই আমবাগান, ধানক্ষেত, হৃদয়পুর...
বর্ণনা করো ধীরে ধীরে
সমস্যা নাই তাতে; দৃশ্য এড়িয়ে যেও না।
পুরোপুরি গোঙানিটা শুনতে চাইছি না
কিছুতেই। তার চেয়ে
ঐ ঝিঝিটার প্রতি চোখ বুজে
ওকে গ্রহণ করাটা প্রশান্তির।

তোমার এই নীল থেকে লাল হয়ে ওঠা
রক্তবিন্দু আমার মোটেও ভালো লাগে না।
বরং একটা গাঢ় আবরণে
দৃশ্যগুলো ঢেকে ফেলাটা বেশ!

এইসব ছোপছোপ শিশুতোষ উপকথার
প্রেমে পড়েছিলাম। শুরুতে পরোয়াই করিনি;
হাত নেড়ে তাড়িয়েছি, মাছি তাড়ার মতো করে।

অথচ
কিছুই ভাল্লাগছে না আজকাল, অগণিত
মিথ্যা সংবাদপত্র, বাহারি চোখ-মুখ
আলোর জৌলুস, সিরামিক সোসাইটি।
এই সবকিছু ছেড়েছুঁড়ে পুরনো
হাতঘড়িটাকে সঙ্গে করে তোমার কাছে
যেতে চাই। এইসব অস্থির দিনরাত্রি ছেড়ে
এই জীববৈচিত্র্য, জীবনচক্র; সব ছেড়ে—সব!

আমি তোমার কোন সৌন্দর্যকে অস্বীকার করবো বলো?

কতো কতো স্মৃতিকে বাম বুকে জমিয়ে রেখে
সেই তো তোমার কাছেই যেতে হবে আবার।

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *