❑ সাম্য রাইয়ান
আমাকে লিখেছে কেউ, তারপরে
বাজারে ছেড়েছে। তবু এতো
পত্র-পুস্তকে দূরবীন চোখে—
মুখ খোলেনি।
মিলনের সকল পথ দেখি আলাদা নারীর মতো
ধূর্ত-ধূসর!
একই আকাশের দিকে চেয়ে
বসে আছি; তবু দেখা হয় নাই
কতোদিন, সুবর্ণ আড়ালকে অবহেলা
করে বসা হয় নাই একসাথে!
বিষণ্ন বরফের ঋণে
মাটিবর্তী কামনারা শ্রান্ত হলে
তুমুল রৌদ্র ছোঁব—
কিংবা পকেটে জমাবো
ফুটফুটে হাঁসের বাচ্চা।
কোলাহল
এড়ানো যাচ্ছে না কিছুতেই,
শুধু
শব্দ পেরিয়ে যাচ্ছি
নিটোল পাথর—সুনীল আলো।
সিলিঙে ঝুলছে হ্যালোজেন ফুল
নিষিদ্ধ মানবিকগাঁথা
ঝিমলির চুল!
প্রতিদিন একঘেঁয়ে ঘুম থেকে ওঠা
আমার ভালো লাগে না।
একদিন অন্য কিছু হবে, ভিন্ন অনুভূতি
ঘুমাবো যথার্থই, জাগবো না।
ভীতু এক বেড়ালছানার মতো
তাকিয়ে—দেখে সে বিবিধ
বিচিত্র বোধি। একটা দুরন্ত মেয়ে
ভোরের ডানায় ছুটে বেড়াচ্ছে।
বলি, ‘শুভ সকাল’।
শুনে বলে, ‘বিরক্ত করো না
আমি ভালো আছি,
করুণ রঙমালা ছাড়িয়ে চূড়ান্ত মেঘের
দিকে যাচ্ছি’। ডুবে যেতে যেতে
মনে হলো; ভেসে থাকাটাই ভালো।
যেতে যেতে ভাবলাম,
তোমাকে ভাবছি বুঝি।
না!
ভাবছি একটা ব্যাকুলনদী...
ভরাশূন্য-বৃথাজন্ম এই
কিছু কি দেখতে পাও?
খোঁজো প্রেম, কামনাবাহার;
উড়ন্ত কফিন, কোথা যাও?
বলেছে কফিন, ‘আহা,
ব্যথায়-বেদনায় ম্লান হয়ে যাই’।
তবু দুপুরকে আসতে দাও; দূরত্ব
বাড়লে তাকে ডেকে নাও;
অস্থির মনের সহোদর, আসুক সে
নিমন্ত্রিত অতিথির মতো।
বিনয়ী পিতার মতো আলিঙ্গন করে
তাকে, একে একে ধ্বংস হয়ে যাও।
বীতশ্রদ্ধ হই, নতজানু হই শ্লেষে
পথের খোঁজের সাথী শুধু বেদনা-রাই;
কালো চেহারা, রুক্ষ চোখ
চলো মনেমনে হারায়ে যাই।
নিয়ম করে
ডুমুর গাছে হেলান দিয়ে
মৃত্যুর সাথে জুয়া খেলি।
কতো কী ভাবছি আমি আজ!
তেতো মুখ, চায়ে স্বাদ নাই
জীবন, তোকে ভালোবেসে মরে যাবো ভাই।
আজানুলম্বিত পথে
যেতে যেতে রথ হারালাম; কোমল
রেণুর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে
শীৎকারগুলো—নিঃসঙ্গ
ঈর্ষার পথ ধরে হেঁটে যায়
খণ্ড খণ্ড নক্ষত্র; —শোনো, এইখানে
যতো উদগ্র প্রহেলিকা,
ধীরে—স্ফটিকের বেশে
ছিটকে যাওয়া রাত..
উদ্বাস্তু
মায়াবী শিবির।
বরফের মতো
ফোঁটা ফোঁটা ঝ’রে
ফুরিয়ে যাচ্ছে রাত।
এই যে
পা দু’খানি
তোমাকে বলছি
সোজা দাঁড়িয়ে থাকো।
দেখলে তো, কালীবাড়ি পাড়ায়
কুকুরও মাতাল। হরিণীর নাভি ফুঁড়ে
বেড়িয়ে আসা ঘন অন্ধকারের পিঠে ভর
ক’রে প্রচুর রাত নামছে আর মদের মতো
তরল কণ্ঠে হাহাকার পান করছে খয়েরি সরীসৃপ!
কামনার গুহা থেকে শব্দেরা উঠে আসছে
যথার্থ সংগীতে। —আহা, যুদ্ধের সূচাগ্রে
কী চমৎকার জুড়ে যাচ্ছে যেন
কচি শিশুদের দেহ। এমন একটা আবহ
তৈরি করছে বেয়নেট; মানুষের দোষ নেই,
ওরা কিছু করেনি।
শিশুরা শুধুই হাসে,
ওরা তবে মৃত্যুই ভালোবাসে!
পরীক্ষিত প্রতিটি রাত্রিতে সকালের
কোনো শুভ্রতা নেই। প্রচুর
যাত্রা শেষে এইবার মৃত্যুকে
যাচাই করতে ক্ষণকাল
ঘুমিয়ে নেয়া যাক। অতিকায় এক
রাতের যাত্রী হয়ে ট্রেনবাক্সে চেপে
আমার গোপন সন্তান, ঘুমাও তুমি।
কাছাকাছি, অথচ দূরে
ফুটছে আলোর বিন্দু;
অদূরে হাহাকার
গূঢ় অন্ধকার
ডাকে।
নিশ্চুপ আঙ্গিকে
শরীর লুকিয়ে—যেন পানপাতা
হয়ে উদ্ভাসিত আর
বিচ্ছুরিত আলোর পাশে
জড়িয়ে থাকা
রাত;
ওহে গভীর রাত
চলো ঘুমোতে যাই...
আমাকে লিখেছে কেউ, তারপরে
বাজারে ছেড়েছে। তবু এতো
পত্র-পুস্তকে দূরবীন চোখে—
মুখ খোলেনি।
মিলনের সকল পথ দেখি আলাদা নারীর মতো
ধূর্ত-ধূসর!
একই আকাশের দিকে চেয়ে
বসে আছি; তবু দেখা হয় নাই
কতোদিন, সুবর্ণ আড়ালকে অবহেলা
করে বসা হয় নাই একসাথে!
বিষণ্ন বরফের ঋণে
মাটিবর্তী কামনারা শ্রান্ত হলে
তুমুল রৌদ্র ছোঁব—
কিংবা পকেটে জমাবো
ফুটফুটে হাঁসের বাচ্চা।
কোলাহল
এড়ানো যাচ্ছে না কিছুতেই,
শুধু
শব্দ পেরিয়ে যাচ্ছি
নিটোল পাথর—সুনীল আলো।
সিলিঙে ঝুলছে হ্যালোজেন ফুল
নিষিদ্ধ মানবিকগাঁথা
ঝিমলির চুল!
প্রতিদিন একঘেঁয়ে ঘুম থেকে ওঠা
আমার ভালো লাগে না।
একদিন অন্য কিছু হবে, ভিন্ন অনুভূতি
ঘুমাবো যথার্থই, জাগবো না।
ভীতু এক বেড়ালছানার মতো
তাকিয়ে—দেখে সে বিবিধ
বিচিত্র বোধি। একটা দুরন্ত মেয়ে
ভোরের ডানায় ছুটে বেড়াচ্ছে।
বলি, ‘শুভ সকাল’।
শুনে বলে, ‘বিরক্ত করো না
আমি ভালো আছি,
করুণ রঙমালা ছাড়িয়ে চূড়ান্ত মেঘের
দিকে যাচ্ছি’। ডুবে যেতে যেতে
মনে হলো; ভেসে থাকাটাই ভালো।
যেতে যেতে ভাবলাম,
তোমাকে ভাবছি বুঝি।
না!
ভাবছি একটা ব্যাকুলনদী...
ভরাশূন্য-বৃথাজন্ম এই
কিছু কি দেখতে পাও?
খোঁজো প্রেম, কামনাবাহার;
উড়ন্ত কফিন, কোথা যাও?
বলেছে কফিন, ‘আহা,
ব্যথায়-বেদনায় ম্লান হয়ে যাই’।
তবু দুপুরকে আসতে দাও; দূরত্ব
বাড়লে তাকে ডেকে নাও;
অস্থির মনের সহোদর, আসুক সে
নিমন্ত্রিত অতিথির মতো।
বিনয়ী পিতার মতো আলিঙ্গন করে
তাকে, একে একে ধ্বংস হয়ে যাও।
বীতশ্রদ্ধ হই, নতজানু হই শ্লেষে
পথের খোঁজের সাথী শুধু বেদনা-রাই;
কালো চেহারা, রুক্ষ চোখ
চলো মনেমনে হারায়ে যাই।
নিয়ম করে
ডুমুর গাছে হেলান দিয়ে
মৃত্যুর সাথে জুয়া খেলি।
কতো কী ভাবছি আমি আজ!
তেতো মুখ, চায়ে স্বাদ নাই
জীবন, তোকে ভালোবেসে মরে যাবো ভাই।
আজানুলম্বিত পথে
যেতে যেতে রথ হারালাম; কোমল
রেণুর দিকে ছুঁড়ে দিয়ে
শীৎকারগুলো—নিঃসঙ্গ
ঈর্ষার পথ ধরে হেঁটে যায়
খণ্ড খণ্ড নক্ষত্র; —শোনো, এইখানে
যতো উদগ্র প্রহেলিকা,
ধীরে—স্ফটিকের বেশে
ছিটকে যাওয়া রাত..
উদ্বাস্তু
মায়াবী শিবির।
বরফের মতো
ফোঁটা ফোঁটা ঝ’রে
ফুরিয়ে যাচ্ছে রাত।
এই যে
পা দু’খানি
তোমাকে বলছি
সোজা দাঁড়িয়ে থাকো।
দেখলে তো, কালীবাড়ি পাড়ায়
কুকুরও মাতাল। হরিণীর নাভি ফুঁড়ে
বেড়িয়ে আসা ঘন অন্ধকারের পিঠে ভর
ক’রে প্রচুর রাত নামছে আর মদের মতো
তরল কণ্ঠে হাহাকার পান করছে খয়েরি সরীসৃপ!
কামনার গুহা থেকে শব্দেরা উঠে আসছে
যথার্থ সংগীতে। —আহা, যুদ্ধের সূচাগ্রে
কী চমৎকার জুড়ে যাচ্ছে যেন
কচি শিশুদের দেহ। এমন একটা আবহ
তৈরি করছে বেয়নেট; মানুষের দোষ নেই,
ওরা কিছু করেনি।
শিশুরা শুধুই হাসে,
ওরা তবে মৃত্যুই ভালোবাসে!
পরীক্ষিত প্রতিটি রাত্রিতে সকালের
কোনো শুভ্রতা নেই। প্রচুর
যাত্রা শেষে এইবার মৃত্যুকে
যাচাই করতে ক্ষণকাল
ঘুমিয়ে নেয়া যাক। অতিকায় এক
রাতের যাত্রী হয়ে ট্রেনবাক্সে চেপে
আমার গোপন সন্তান, ঘুমাও তুমি।
কাছাকাছি, অথচ দূরে
ফুটছে আলোর বিন্দু;
অদূরে হাহাকার
গূঢ় অন্ধকার
ডাকে।
নিশ্চুপ আঙ্গিকে
শরীর লুকিয়ে—যেন পানপাতা
হয়ে উদ্ভাসিত আর
বিচ্ছুরিত আলোর পাশে
জড়িয়ে থাকা
রাত;
ওহে গভীর রাত
চলো ঘুমোতে যাই...