হালকা রোদের দুপুর : কবির সাথে কিছুক্ষণ

❑  কৌশিক সেন

জানি, অগুনতি আকাশের নিচে তুমিও দাড়িয়েছিলে কবি। কবোষ্ণ রোদে স্বেদ নেমে আসে নাভির স্তরে। আলাপ হয় নিভৃতির সাথে। মেঘ মেদুর হয়ে ওঠে কবির রৌদ্রগান। পাঠকের সপ্তডিঙা নিমজ্জিত হয় অবগাহনের পুণ্যস্নানে।

হ্যাঁ, সে এক নরম রোদের দিন। বন্ধুগাছ, নশ্বর ভাতঘুমের ওপাড়ে। ভালোবাসা প্রত্যাশী ছেলেমেয়েগুলো আজওতো সূর্যাহত! আজওতো আকস্মিক জেগে ওঠে স্বপ্নের সূর্যলতা ফুলগুলি! কবি, তোমার সাথে গোপন অভিসারে তো আমিও ভিজে উঠি, এই অবেলায়! 

ছিলায় টান মেরেছি এমনই কোনো বিষণ্ণ দুপুরে। চন্দন গন্ধে ভেসে গেছে চরাচর। কবি, ধনুকের তার থেকে তুমিও কি হারিয়ে ফেলেছো সুর, সঙ্গ ও সমূহ কম্পন! আমারই মতো! এই ভরদুপুরে তোমাকেও কি সহ্য করতে হচ্ছে ব্যক্তিগত টেম্পারেচার গিলে ফেলার অব্যক্ত যন্ত্রণা! এসো তবে, প্রযুক্ত জ্যা থেকে নিক্ষিপ্ত করি অদৃষ্টপূর্ব অমোঘ ধনুর্বানটি!

এতো বিষাদ নয়, তবু কেন থেমে গেল কুবোপাখির ডাক! তবু কেন মেঘ ঘনীভূত হয় দূরের নৈঋতে! স্পষ্ট দেখেছি কবি, তুমিও ফিরিয়ে দিয়েছো কান্নার সংকেত। স্পষ্ট শুনেছি পাহাড় ডিঙোতে আসা বাক্রুদ্ধ ঘোড়ার হ্রেষারব। শিহরণে কেঁপে কেঁপে উঠেছি ভরদুপুরে।

ভাতঘুমে স্বপ্নের আর্কিপেলাগো যেন! স্বপ্নের পাশে একটা ছটফটে শহর, একাকী দ্বীপের মত চঞ্চল। কবি, তুমিও তাহলে ডুবে যাচ্ছ, ব্যকুলনদীর জলে! কে বলেছে তোমায়, কোন অরূপকথার গল্পে সূর্যাস্ত হয়, আহত ফুলের পাশে গেঁথে রাখা হয় শিশুদের হাসি। জ্যৈষ্ঠের চরারোদে টুকরো টুকরো ছড়িয়ে পড়ে কাঁচ স্বচ্ছ ভালোবাসা।

তোমারও কি অবেলায় চোখ লেগে গিয়েছিল তবে! অনাগত ঋতুর ওপর বিছিয়ে দাও শীর্ণ নদীটি! যেপথে উপশীরা বেকে গেছে আমিও তো সেই পথ ধরি, হাতে হাত ধরি তোমারই। শুধু লুকানো জীবাশ্মের ছায়া পড়ে থাকে খা খা দুপুরের গন্ধে।

(আশুতোষ বিশ্বাস সম্পাদিত ‘তারারা–সাম্য রাইয়ান বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত)

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *